The Justice Corner is a leading law firm in Bangladesh, offering specialized legal services to both local and international clients. We serve as trusted advisors to prominent businesses, companies, and banks.

Blog Details

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাংলাদেশ ২০২৫

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাংলাদেশ ২০২৫

বিবাহ শুধু একটি সামাজিক বন্ধন নয়, এটি একটি আইনগত সম্পর্কও। বাংলাদেশে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন (Marriage Registration BD) করা বাধ্যতামূলক, যাতে ভবিষ্যতে আইনি অধিকার, উত্তরাধিকার, দেনমোহর ও পারিবারিক নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকে।

মুসলিম বিবাহ রেজিস্ট্রেশন নিয়ম (Muslim Marriage Registration)

বাংলাদেশে মুসলমানদের বিয়ে হয় কাজী অফিসের মাধ্যমে। বিবাহ সম্পন্ন হলে কাজী কাবিননামা (Nikah Nama) প্রস্তুত করে রেজিস্ট্রেশন করেন।

প্রক্রিয়া:

  • পাত্র ও পাত্রী দুজনের সম্মতিতে বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে
  • অন্তত দুইজন সাক্ষী থাকতে হবে
  • কাজী উপস্থিত থেকে কাবিননামা পূরণ ও স্বাক্ষর করাবেন
  • দেনমোহর নির্ধারণ করা হবে
  • বিয়ে শেষে রেজিস্ট্রেশন নম্বরসহ কাবিননামা ইস্যু করা হবে

কোথায় করবেন:

  1. স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী অফিস)
  2. অথবা অনুমোদিত মসজিদ/ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়

হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন নিয়ম (Hindu Marriage Registration)

হিন্দু সম্প্রদায়ের বিয়ে হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন ২০১২ অনুযায়ী রেজিস্টার করা যায়।
এখানে রেজিস্ট্রেশনের দায়িত্বে থাকেন হিন্দু বিবাহ নিবন্ধক (Hindu Marriage Registrar)।

প্রক্রিয়া:

  1. পাত্র ও পাত্রী উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে (পুরুষ ২১, নারী ১৮ বছর)
  2. ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ে সম্পন্ন করতে হবে
  3. নির্ধারিত ফরমে আবেদন করে নিবন্ধন ফি জমা দিতে হবে
  4. নিবন্ধক স্বাক্ষর ও সিলমোহরসহ সার্টিফিকেট ইস্যু করবেন

বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

প্রয়োজনীয় কাগজব্যাখ্যা
জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) / জন্ম সনদপাত্র ও পাত্রী উভয়ের
পাসপোর্ট সাইজ ছবি২ কপি করে
অভিভাবকের সম্মতিপত্রযদি পাত্রী অপ্রাপ্তবয়স্ক হয়
বিবাহের সাক্ষীর NIDকমপক্ষে ২ জন সাক্ষী প্রয়োজন
পূর্ববর্তী বিবাহের বিবরণ(যদি প্রযোজ্য হয়, যেমন তালাকনামা)
বিবাহের ধরনআনুমানিক খরচ (BDT)
সাধারণ মুসলিম বিবাহ (কাজীর মাধ্যমে)১,০০০ – ২,০০০ টাকা
অনলাইন রেজিস্ট্রেশনসহ১,৫০০ – ৩,০০০ টাকা
হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশন১,০০০ – ২,৫০০ টাকা
কোর্ট ম্যারেজ / রেজিস্ট্রেশন অফিসে৫,০০০ – ১০,০০০ টাকা

অনলাইনে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করবেন যেভাবে

বর্তমানে কিছু এলাকায় অনলাইন বিবাহ রেজিস্ট্রেশন (register marriage online) সেবা চালু হয়েছে।

পদক্ষেপ:

  1. https://bris.lgd.gov.bd বা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন
  2. আবেদন ফরম পূরণ করুন
  3. প্রয়োজনীয় নথি ও ছবি আপলোড করুন
  4. নির্ধারিত ফি পরিশোধ করুন
  5. যাচাই শেষে ডিজিটাল কাবিননামা / সার্টিফিকেট ডাউনলোড করুন

কোর্ট ম্যারেজ প্রক্রিয়া বাংলাদেশে (Court Marriage BD)

কোর্ট ম্যারেজ হল আইনের অধীনে সরাসরি রেজিস্ট্রার অফিসে সম্পন্ন বিবাহ।
এটি সাধারণত তখন করা হয়, যখন ধর্মীয় রীতি অনুসারে বিয়ে না করে আইনি বৈধতা চাওয়া হয়।

প্রক্রিয়া:

  1. ম্যাজিস্ট্রেট বা সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে আবেদন
  2. NID, ছবি, সাক্ষী ও হলফনামা জমা
  3. বিবাহ ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর
  4. নিবন্ধন ও সার্টিফিকেট প্রদান

খরচ:

আনুমানিক ৫,০০০ – ১০,০০০ টাকা (২০২৪ অনুযায়ী)

FAQ – সাধারণ প্রশ্নোত্তর

মুসলিম ও হিন্দু উভয়ের জন্য বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কি বাধ্যতামূলক?

হ্যাঁ, আইন অনুযায়ী সকল ধর্মের জন্য বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। নিবন্ধন না করলে ভবিষ্যতে আইনি প্রমাণ বা সম্পত্তি দাবি জটিল হতে পারে।

কোন কাগজ লাগবে বিবাহ রেজিস্ট্রেশনে?

জাতীয় পরিচয়পত্র, ছবি, সাক্ষীর NID, ও প্রয়োজনে তালাকনামা বা সম্মতিপত্র প্রয়োজন।

রেজিস্ট্রেশন না করলে কি সমস্যা হতে পারে?

  1. কাবিন বা দেনমোহর দাবি করা যায় না
  2. স্ত্রী/স্বামীর আইনি অধিকার হারানোর ঝুঁকি
  3. সন্তানের জন্ম নিবন্ধনে সমস্যা হতে পারে
  4. উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়

কাবিন কত হওয়া উচিত?

কাবিনের পরিমাণ নির্ভর করে উভয় পক্ষের সম্মতির ওপর। সাধারণত সামাজিক ও আর্থিক অবস্থান অনুযায়ী নির্ধারিত হয়।

বিয়ে করতে কতজন সাক্ষী প্রয়োজন?

মুসলিম বিবাহে কমপক্ষে ২ জন প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষী থাকতে হবে।
হিন্দু বিবাহে ধর্মীয় রীতিতে নির্ধারিত পুরোহিত ও পরিবার সাক্ষী থাকেন।

নকল কাবিননামা চেনার উপায় কী?

  1. সরকারি কাজী অফিসের সিল ও স্বাক্ষর যাচাই করুন
  2. রেজিস্ট্রেশন নম্বর bris.lgd.gov.bd থেকে যাচাই করুন
  3. নকল কাবিননামায় সাধারণত বানান ভুল বা সিলের অসামঞ্জস্য থাকে

হিন্দু কোর্ট ম্যারেজ এর খরচ কত ২০২৪ সালে?

সাধারণত ৫,০০০ – ৮,০০০ টাকা খরচ হয়, তবে অঞ্চল ও রেজিস্ট্রার অফিস অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে।

উপসংহার

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা শুধু আইনগত বাধ্যবাধকতা নয়, এটি একটি পরিবারের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষার মাধ্যম।
মুসলিম, হিন্দু বা অন্য ধর্ম—যেই হোন না কেন, বিয়ে শেষে অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন করে আইনি বৈধতা নিশ্চিত করুন।